করাঙ্গি নদী ( কোরাঙ্গি নদী ) korangi river : হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার পাহাড়ি এলাকা হতে উৎপন্ন হয়ে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার খোয়াই নদীতে মিলিত হয়েছে। হবিগঞ্জ জেলা শহরের পাশ দিয়ে এক বৃত্ত রচনা করে প্রবাহিত হয়েছে খোয়াই । খোয়াই যেখান দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তার পশ্চিমে পাহাড়ি রঘুনন্দন অরণ্যের ভিতর থেকে উৎপন্ন হয়েছে সুতাং নদী। সুতাং ও কোরাঙ্গি প্রায় সমান্তরাল উত্তর প্রবাহী নদী দুটি বাহুবল সদর ও মিরপুরের দক্ষিণে পাহাড় টিলা, উঁচু-নিচু চা-বাগান অধ্যুষিত এলাকায় প্রবাহিত হয়েছে।
করাঙ্গি নদী’র নাম করণ : ইসলাম খাঁমোগল বাহিনী শ্রীমঙ্গল কমলগঞ্জ কুলাউড়ার রণক্ষেত্রে উসমান খাঁর বাহিনীর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার আগে এই এলাকায় অবস্থান নিয়েছিল। এই প্রাচীন ভূমির অরণ্যে বন্য হাতির প্রাচুর্য ছিল। হয়ত বন্য হাতির প্রাচুর্যের কারণেই এই নদীর নাম হয়েছে কোরাঙ্গি। কারণ হাতির আরেক নাম তো কোরাঙ্গ। এই অবিরাম বয়ে চলা কোরাঙ্গির জলে হাতির দল হাজার বছর ধরে তাদের শুঁড় দিয়ে খেলায় মেতেছে।
নানান প্রতিবন্ধকতার কারণে নদী বর্তমানে ক্ষীণবাহী। আখাউড়া-সিলেট রেলপথ, ঢাকা- সিলেট পুরাতন মহাসড়ক এবং আধুনিক বাইপাসে দুটি সড়ক সেতু রয়েছে কোরাঙ্গি নদীর ওপর। নদীর দৈর্ঘ্য ৫৮ কিমি। প্রশস্ত ৩০ মিটার। গভীরতা ৪ মিটার আর অববাহিকার আয়তন ২০০ বর্গ কিমি। নদীটি বারোমাসি। ফেব্রুয়ারিতে পানি প্রায় শুকিয়ে যায়। তখন সুফিয়াবাদ এলাকায় পানি থাকে ৪৪ মিটার। তবে বর্ষা মৌসুমে মে-জুন মাসে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। তখন গভীরতা বৃদ্ধি পেয়ে ৪ মিটার পর্যন্ত হয়। সাধারণত বর্ষাকালে নদীটি প্লাবিত হয়। এই নদীর তীরে বাহুবল উপজেলা সদর অবস্থিত। এই নদীর অববাহিকার গুইংগাজুরী এফসিডি প্রকল্প রয়েছে বাপাউবো’র।
উৎস : পাহাড়
পতিত মুখ : নদী
নদীর তীরবর্তী বাজার সমূহ : বাহুবল বাজার ।
প্রবাহিত জেলা : হবিগঞ্জ
প্রবাহিত উপজেলা : বানিয়াচং, হবিগঞ্জ সদর, বাহুবল, চুনারুঘাট
নদীর দৈর্ঘ্য : প্রায় ৫৮ কিলোমিটার
প্রশস্ত : গড় ৩৫ মিটার
অববাহিকার আয়তন : ২০০ বর্গ কিমি।
প্রকৃতি : সর্পিল আকার
বন্যা প্রবণতা : বন্যা প্রবণ
বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ : নদীর অববাহিকার গুইংগাজুরী এফসিডি প্রকল্প রয়েছে বাপাউবো’র।
পানি প্রবাহের পরিমাণ : ফেব্রুয়ারিতে পানি প্রায় শুকিয়ে যায়। তখন সুফিয়াবাদ এলাকায় পানি থাকে ৪৪ মিটার। তবে বর্ষা মৌসুমে মে-জুন মাসে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। তখন গভীরতা বৃদ্ধি পেয়ে ৪ মিটার পর্যন্ত হয়।
নৌ-রোড : নদীটি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃক নির্ধারিত নৌ রোডের তথ্য উল্লেখ্য নেই।
নদী নং : বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক ধলা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী নং ১৮
লেখা : শাহাবুদ্দিন শুভ
তথ্য সূত্র :
১. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি, কথাপ্রকাশ, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, পৃষ্ঠা ১৮১, ১৮২ ।
২. ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ১৫২, ১৫৩ ।
৩. মানচিত্র, বাংলাপিডিয়া ও গুগল ম্যাপ থেকে