ডাউকি নদী

ডাউকি নদী (Dauki River) :: সিলেট বিভাগের দুই জেলার মধ্যে ‘ডাউকা’ ও ‘ডাউকি’ নামে দুটি নদী আছে। ডাউকা নদী সুনামগঞ্জ জেলার চাতল নদী হতে উৎপত্তি লাভ করে একই জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার বটের খাল নদীর মধ্যে পড়েছে। যার দৈর্ঘ্য ৮ কিমি। অন্যদিকে ডাউকি নদী ভারতে মেঘালয় রাজ্যের শিলং মালভূমির দক্ষিণ- পশ্চিম অঞ্চল থেকে নদীটি উৎপন্ন হয়েছে। এটি একটি ক্ষুদ্র পাহাড়ি নদী। সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং দিয়ে নদীটি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ভারতের মেঘালয় ও বৃহত্তর সিলেটের উত্তরাংশের মধ্যে সীমানায় অবস্থিত একটি চ্যুতির নাম ডাউকি। পাহাড়ি নদী বলে ডাউকি স্বাভাবিকভাবেই খরস্রোতা। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নদীটির গতিপথ সর্পিল। বাংলাদেশের সীমানায় অভ্যন্তরে প্রবেশের পর এটি দক্ষিণ-পশ্চিম অভিমুখী সুনামগঞ্জ জেলার দিকে প্রবাহিত হয়েছে।

মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের সময় উজানের জলনিষ্কাশন অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে নদীতে প্রবাহ অত্যন্ত বেড়ে যায় এবং শিলং মালভূমির পাহাড়গুলো থেকে স্রোতের সঙ্গে বড় বড় গন্ডশিলা । মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের সময় উজানের জলনিষ্কাশন অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে নদীতে প্রবাহ অত্যন্ত বেড়ে যায় এবং শিলং মালভূমির পাহাড়গুলো থেকে স্রোতের সঙ্গে বড় বড় গন্ডশিলা (boulder) পরিবাহিত হয়ে আসে। নদীবাহিত এসব গন্ডশিলা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সংগ্রহ করে নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হয়। নির্মাণ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় গন্ডশিলা সরবরাহ করে নদীটি এদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। উজান থেকে নিয়মিত পানি সরবরাহের কারণে নদীর পানি খুবই স্বচ্ছ। ডাউকি নদী স্থানীয় নৌযোগাযোগের একটি মাধ্যমও বটে। নান্দনিক দৃষ্টিকোণ থেকে ডাউকি নদী ও এর আশপাশের এলাকা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি লীলাভূমি। প্রতিবছর বিশেষ করে, শীতকালে এখানে হাজার হাজার মানুষ বনভোজন ও নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে।

ভ্রমণ স্থান
ডাউকি ব্রিজ, আমগট নদীর উপর নির্মিত একটি ঝুলন্ত সেতু। এটা ব্রিটিশদের দ্বারা ১৯৩২ সালে নির্মিত হয়েছিল।( যদিও সেতুটি বাংলাদেশের সীমানায় নয়)

সীমান্ত-ফাঁড়ি
বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে অল্প ক’টি স্থল সীমান্ত পারাপারের মধ্যে ডাউকি-তামাবিল একটি। এটি মূলত বাংলাদেশে কয়লা পরিবহণের জন্য ব্যবহৃত হয়। পিক-মৌসুমে প্রতিদিন ৫০০ এর মতো ট্রাক এই স্থল বন্দর অতিক্রম করে।

ডাউকি নদীর তীরবর্তী বাজার :
জাফলং বাজার, লন্ডন বাজার

পানি প্রবাহের পরিমাণ :
তথ্য পাওয়া যায়নি

নদী নং :
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক বিবিয়ানা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী নং ৩০ ।

শাহাবুদ্দিন শুভ

তথ্যসূত্র
১. বাংলাদেশের নদীকোষ, ড. অশোক বিশ্বাস, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ২১২।
২. বাংলাদেশের নদ নদী , ম ইনামুল হক, জুলাই ২০১৭, অনুশীলন, পৃষ্ঠা ৫৬
৩. বাংলাদেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড ওয়েবসাইট ০৬.১০.২০১৯
৪. জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন ওয়েবসাইট ০৬.১০.২০১৯
৫. বাংলাদেশ ভ্রমণসঙ্গী, মোস্তফা সেলিম, মার্চ ২০১১, পৃষ্ঠা ১৯৮
৬ .ডাউকি নদীর ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

Facebook Comments Box

About শাহাবুদ্দিন শুভ

Read All Posts By শাহাবুদ্দিন শুভ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *