বালাগঞ্জ উপজেলা Balaganj Upazila (সিলেট জেলা) আয়তন: ১৬৭.৫৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৩৬´ থেকে ২৪°৪৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৩৮´ থেকে ৯১°৫৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে দক্ষিণ সুরমা ও বিশ্বনাথ, দক্ষিণে রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলা, পূর্বে ফেঞ্চুগঞ্জ, পশ্চিমে বিশ্বনাথ, জগন্নাথপুর ও নবীগঞ্জ উপজেলা।
বালাগঞ্জ উপজেলা : বৃহত্তর সিলেট জেলার বর্তমান বালাগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ এবং রাজনগর উপজেলা নিয়ে ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে বালাগঞ্জ থানা (পুলিশ স্টেশন) গঠিত হয়। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে গেজেট নোটিফিকেশন নং ১৭৬ তাং ১০/০১/১৯২২ মূলে বর্তমান বালাগঞ্জ উপজেলা এলাকা নিয়ে বালাগঞ্জ থানা পুনর্গঠিত হয়। পরবর্তীতে ৭ নভেম্বর, ১৯৮২ খ্রিঃ তারিখে বালাগঞ্জ থানা উন্নীত হয় এবং বালাগঞ্জ উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।
বালাগঞ্জ উপজেলার নামকরণের ইতিহাস : ‘বালাগঞ্জ’ নামকরণ নিয়ে গবেষকদের মধ্যে বিভিন্ন মত বিদ্যমান রয়েছে। কারো মতে এর আদি নাম ছিল ‘কুশিয়ারকূল’যা এখানকার প্রধান নদী কুশিয়ারা’র পারে উৎপাদিত কুশিয়ার’ (আঁখ) থেকে আগত এবং এ নদীটিও সেজন্য কুশিয়ারা নামে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে এখানে গড়ে ওঠা মদন মোহন জিউ আশ্রমের প্রভাবে নাম পরিবর্তিত হয়ে মদনগঞ্জ এবং তা থেকে বালাগঞ্জ নাম ধারণ করে। কথিত আছে, মদন মোহন জিউ আশ্রমের সেবায়েতগণ হাতে প্রচুর পরিমাণে ‘বালা’ (মহিলাদের হাতে পরার বিশেষ ধরণের চুড়ির মত অলঙ্কার যা স্বর্ণ এবং ব্রোঞ্জ এর তৈরি ) পরতেন এবং এর ফলে এখানে বিপুল পরিমাণে ‘বালা’ কেনা-বেচা হত বলেই বালাগঞ্জ নামকরণ হয়। অনেকে মনে করেন গুরুত্বপূর্ণ নৌ-বন্দর হিসেবে এখানে ‘বালা বালা’ (ভালো ভালো –এর স্থানীয় রূপ) জিনিষপত্র পাওয়া যেত বলে এর নাম বালাগঞ্জ হয়েছে।
অনেকে মনে করেন, তৎকালে প্রভাবশালী বালা পদবি গোষ্ঠীর কোনো এক বা একাধিক লোকের সহায়তায় কুশিয়ারা নদীর তীরে একটি গঞ্জ গড়ে উঠে। প্রতিষ্ঠিত জনগোষ্ঠীর নামানুসারে বাজারটির নাম রাখা হয় বালাগঞ্জ। শরীয়তপুরসহ বাংলাদেশের আরো কয়েকটি জায়গায় এরূপ বালা শব্দযোগে স্থানের নাম রয়েছে। যেমন- শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত বালাবাজার।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি আতাউল গনি ওসমানীর পৈতৃক নিবাস বালাগঞ্জ উপজেলার দয়ামীর গ্রামে।
বালাগঞ্জ উপজেলা
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা শহর | জনসংখ্যা গ্রাম | (প্রতি বর্গ কিমি) |
– | ৬ | ৯৪ | ১৮২ | ৭৮১১ | ১১১০৬২ | ৭০৯.৪৭ |
বালাগঞ্জ উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গকিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার |
৪.৪১ | ২ | ৭৮১১ | ১৭৭১ | ৬১.০ |
উপজেলার ইউনিয়ন সমূহের তথ্য
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | পুরুষ | মহিলা | শিক্ষার হার (%) |
দেওয়ান বাজার ৩৩ | ১১০৯৯ | ১৫৭০৯ | ১৬৪২৬ | ৪৬.৩ |
পশ্চিম গৌরীপুর ৬০ | ৬১৮৯ | ৬৭৭৩ | ৭১৪০ | ৫০.১ |
পূর্ব গৌরীপুর ৭০ | ৬৭৪২ | ৭৭০২ | ৮৪৩৮ | ৫৪.৫ |
পূর্ব পৈইলানপুর ৬৭ | ৫০৯২ | ৫৬১৩ | ৬০৫৬ | ৩৪.৪ |
বালাগঞ্জ ১১ | ৫৯২১ | ১৩৫৭৩ | ১৩৯৩২ | ৫৯.১ |
বোয়ালজুর বাজার ১৩ | ৫২৭২ | ৮৫৮৭ | ৮৯২৪ | ৪৯.৩ |
বালাগঞ্জ উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধ : ১৯৭১ সালের ৮ এপ্রিল পাকিস্তানি সৈন্যরা সাদিপুর আসার পথে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে যুবক মাসুদ আহমেদকে হত্যা করে। তারপর তারা আশপাশের গ্রামে প্রবেশ করে যাকে পায় তাঁকেই ধরে সাদিপুর ফেরিঘাটে নিয়ে যায় এবং ২ জন ২ জন করে বেঁধে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে।
১০ এপ্রিল ১০জন পাকিস্তানি সৈন্য তাদের এদেশীয় দোসরের সহযোগিতায় পশ্চিম সিরাজনগর গ্রামে প্রবেশ করে পরেশ চন্দ্র দেব ও নন্দলাল পালকে গুলি করে হত্যা করে এবং উমেশ দত্তের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। ৬ মে পাকিস্তানি সৈন্যরা তাজপুর বাজারে এসে পাঁচপাড়া গ্রামের কনর মিয়ার কাছে হিন্দু পাড়ার অবস্থান জানতে চায়, কিন্তু তিনি জানাতে ব্যর্থ হলে তাঁকে গুলি করে হত্যা করে। তারপর তারা ইলাশপুর গ্রামে প্রবেশ করে সুধীর চক্রবর্তী, বিধুরঞ্জন চক্রবর্তী, রাকেশরঞ্জন চক্রবর্তী, মহেশ কুমার পাল, খোকা ধর, দিগেন্দ্র কুমার দাস ও মনোরঞ্জন দেবকে ধরে এনে সবাইকে গুলি করে হত্যার পর সম্পূর্ণ গ্রামে অগ্নিসংযোগ করে।
বুরুঙ্গা উচ্চবিদ্যালয়ে গণহত্যা : পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের নির্মম গণহত্যার নীরব সাক্ষী বুরুঙ্গা উচ্চবিদ্যালয়। ২৬ মে সকাল ১০টায় ৪টি গাড়িতে করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেনের নেতৃত্বে একটি সৈন্যদল বুরুঙ্গা উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আসে। ইতোমধ্যে তাদের এদেশীয় দোসররাও স্কুল মাঠে উপস্থিত হয়। পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের দোসররা স্থানীয় অধিবাসীদেরকে পরিচয়পত্র বিতরণ করার কথা বলে অনেককেই উপস্থিত করেন। তারপর দোসররা সমবেত হিন্দু ও মুসলমানদেরকে আলাদা করে ভাগ করে হিন্দুদেরকে রেখে মুসলমানদেরকে ছেড়ে দেয়। পাকিস্তানী ক্যাপ্টেনের নির্দেশ অনুযায়ী তাদের দোসরা দড়ি দিয়ে হাত পিছমোড়া করে বাঁধতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে অনেকে পালাতে থাকেন। তখন পাকিস্তানি সৈন্যরা গুলি বর্ষণ শুরু করলে ৭২ জন শহিদ হন এবং পালিয়ে যেতে সক্ষম হন শিক্ষক প্রীতিরঞ্জন চৌধুরী, দেবেন্দ্র চন্দ্র দেব ও রামু মালাকার। তারপরই তারা সমগ্র গ্রামে লুটপাট ও নারীর শ্লীলতাহানি করতে থাকে। সেদিনের গণহত্যায় শহিদ ৭২ জনের মধ্যে ৬১ জনের নাম জানা গেছে।
আদিত্যপুর গ্রামে গণহত্যা : বুরুঙ্গা উচ্চবিদ্যালয়ের মতোই আরেকটি নির্মম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় আদিত্যপুর গ্রামে। রাতের আঁধারে পাকিস্তানি সৈন্যরা তাদের স্থানীয় দোসরদের সহযোগিতায় গ্রামটি ঘিরে ফেলে এবং শান্তি কমিটির মাধ্যমে কার্ড প্রদানের কথা বলে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে সবাইকে উপস্থিত হতে বলে। গ্রামের অনেকেই তাদের দুরভিসন্ধি বুঝতে পেরে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন নি বলে অস্ত্রের মুখে সবাইকে জড়ো করা হয় সেখানে। স্থানীয় দোসর আবদুল আহাদ চৌধুরীর সঙ্গে পরামর্শ শেষে পাকিস্তানি ক্যাপ্টেনের নির্দেশে ৬৩জন গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যা করা হয় । গণহত্যা শেষে শুরু হয় নারীর শ্লীলতাহানি । এঁদের অনেককে সেনাছাউনিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেদিনের গণহত্যায় শহিদ ৬৩ জনের মধ্যে ৪০ জনের নাম জানা গেছে।
সুরিকোনা গ্রামে গণহত্যা : শেরপুর থেকে প্রায় মাইল তিনেক পশ্চিমে কুশিয়ারা নদীর উত্তরে সুরিকোনা গ্রামটি অবস্থিত। নিভৃত এই গ্রামটিকে নিরাপদ আশ্রয় ভেবে আশপাশের গ্রাম থেকে অনেক মানুষ এই গ্রামে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। স্থানীয় দোসরদের মাধ্যমে এই খবর পেয়ে পাকিস্তানি সৈন্যরা গভীর রাতে স্পিড বোটে করে এসে ৩টি দলে বিভক্ত হয়ে গ্রামে অবস্থান নেয়। একটি দল ঘুমন্ত গ্রামবাসীদেরকে অস্ত্রের মুখে বন্দি করে কুশিয়ারা নদী তীরে জড়ো করে এবং বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। প্রাণের ভয়ে গ্রামের অনেকেই পালাতে থাকেন। পাকিস্তানি সৈন্যদের নিষ্ঠুরতা থেকে রেহাই পান নি মসজিদে নামাজ আদায়রত মুসল্লিরাও। ভোরে গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার মসজিদে নামাজ আদায়রত মুসল্লিদেরকেও ধরে এনে জড়ো করা হয় কুশিয়ারার তীরে। সেখানে গ্রামের অন্যান্য স্থান থেকে আনা বন্দিদের সঙ্গে মুসল্লিদেরকে একত্র করে মোট ১৮ জনকে লক্ষ্য করেগুলি করা হয়। গুলি ছোড়ার পূর্ব মুহূর্তে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ৩জন প্রাণে রক্ষা পান।
দ্বিতীয় দলটি সুরিকোনা গ্রামের সাইদুর রহমান, সুরুজ আলী, আবদুল জব্বার, আবদুল বাহার ও তাজপুর গ্রামের রমজান মিয়াকে ধরে এনে গ্রামের উত্তর পাশে ভাঙার পাড়ায় একইভাবে হত্যা করে। গুরুতর আহত হন আতাউর রহমান ও মানিক মিয়া। একইভাবে তৃতীয় দলটি সুরিকোনা গ্রামের মকরম উদ্দিন, সাদউদ্দিন, জহিরুদ্দিন ও তাজপুরের আগন মিয়াসহ আরও ২ জনকে ধরে এনে গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় হত্যা করে। এপ্রিল-ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানি সৈন্যরা বিভিন্ন এলাকার লোকজনকে ধরে শেরপুর ফেরিঘাটে এনে গুলি করে হত্যা করত অথবা হাত-পা বেঁধে জীবন্ত নিক্ষেপ করত কুশিয়ারার গভীর পানিতে। মুক্তিযুদ্ধকালীন শেরপুরে কত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে তার সঠিক সংখ্যা নিরূপণ করা কঠিন।
গালিমপুর গ্রামে গণহত্যা : কুশিয়ারা নদীর উত্তর তীর ঘেঁষে গালিমপুর ও বল্লভপুর গ্রাম দুটি অবস্থিত। ১৯ মে সকালে পাকিস্তানি সৈন্যরা ৩টি নৌকায় করে বল্লভপুরে এসে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুর রাজা চৌধুরিকে গ্রামে অগ্নিসংযোগ করার জন্য নির্দেশ দেয়। তিনি এই কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাঁর হাত-পা বেঁধে তাঁকে গালিমপুর নিয়ে যায় তারা। গালিমপুরে প্রবেশ করেই তারা গ্রামবাসীদেরকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে। তারা যাকেই সামনে পেয়েছে তাঁকেই গুলি করে হত্যা করেছে। গণহত্যার পর পরই পাকিস্তানি সৈন্যরা গ্রামে লুটপাট আর অগ্নিসংযোগ করে। মাত্র ৪টি বাড়ি ব্যতীত সমগ্র গ্রাম আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায়। তা ছাড়া যাওয়ার সময় তারা গ্রামের ২জন নারীকে ধরে নিয়ে যায়। ২ দিন নির্যাতনের পর তাঁদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গণহত্যার স্মৃতিস্তম্ভ
আদিত্যপুর গণহত্যার স্মৃতি তোরণ : ১৯৭১ সালের ১৩ জুন পাকিস্তানসেনাবাহিনী কর্তৃক বালাগঞ্জের আদিত্যপুর গ্রামে সংঘটিত মর্মান্তিক গণহত্যায় ৬৩জন শহিদদের স্মরণে এখানে একটি স্মৃতি তোরণ গড়ে তোলা হয়েছে। স্বাধীনতার পর ২৪ হাত দীর্ঘ ও ৯ হাত প্রস্থ সীমানা প্রাচীর দিয়ে বধ্যভূমিটি সংরক্ষণ করা হয়। পরবর্তীকালে এখানে একটি তোরণ নির্মাণকরা হয়।
দেওয়ান আবদুর রহিম হাই স্কুল স্মৃতিস্তম্ভ : স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বালাগঞ্জ থানার দেওয়ান আবদুর রহিম হাই স্কুল প্রাঙ্গণে ৩ স্তর বিশিষ্ট একটি বেদির ওপর একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। ৯’×৯’, ৬.৫×৬.৫’ ও ৪.৫x৪.৫’ মাপের স্তর ৩টি ৬” ব্যবধানে স্থাপিত। এর ওপরের মূল স্তম্ভটি ৭৪” উঁচু। এর নীচের ও উপরের দিকের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ যথাক্রমে ১৬×১৬’ ও ১৪”x১৪”। কালো রঙের ইট-সিমেন্টের তৈরি স্তম্ভটির মাথা ৬” নীচ থেকে ঢালু হয়ে গেছে।
বুরুঙ্গা গণহত্যার স্মৃতিফলক : পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এদেশীয় দোসররা ২৬ মে বালাগঞ্জের বুরুঙ্গা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জোরপূর্বক লোকজনকে ধরে এনে জড়ো করে। তাঁদের মধ্য থেকে ৭২জন গ্রামবাসীকে হত্যা করা হয়। নিহতদের গণকবর ও বধ্যভূমিটি সংরক্ষণ করে ১০ মিটার×৪.৫ মিটার স্থানকে ১.০৭ মিটার উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরাও করে একটি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান : মসজিদ ৪৪০. মন্দির ৬, মাযার ৫।
উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: ওসমানপুর জামে মসজিদ, বায়তুল মোয়াজ্জেম জামে মসজিদ (গোয়ালাবাজার), হরিনগর শিবমন্দির, নিশিকান্তদেব ব্রহ্মচারী মন্দির, শাহ তাজউদ্দিনের মাযার, ফকির কানাই শাহের মাযার, কটালী শাহের মাযার (শেরপুর), সৈয়দ উসমান বোগদাদীর (রঃ) মাযার, নারাইন শাহের মাযার।
শিক্ষার হার : গড় হার ৫০.২%; পুরুষ ৪৮.৮%, মহিলা ৪৮.৮%।
বালাগঞ্জে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : কলেজ ৬, মহিলা কলেজ ১, উচ্চ বিদ্যালয় ৩০টি, উচ্চ বিদ্যালয়(বালিকা) ৪টি, জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয় ০১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৭৩, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪৪টি, দাখিল মাদ্রাসা ১০টি , আলিম মাদ্রাসা ৪, ফাজিল মাদ্রাসা ২।
বালাগঞ্জে উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শরৎ সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৬), মঙ্গলচন্ডী নিশিকান্ত উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৭), নবগ্রাম হাজী মোঃ ছাইম উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), সদরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯)।
বালাগঞ্জে দর্শনীয় স্থান : দয়ামীরে মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি এম.এ জি ওসমানীর পৈতৃক বাড়ি।
হাটবাজার ও মেলা : বালাগঞ্জ বাজার, গোয়ালা বাজার, তাজপুর বাজার, দয়ামীর বাজার, খালের মুখ হাট এবং ঘিওর খালের মেলা উল্লেখযোগ্য।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র : উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র ৬, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৬, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৭, কমিউনিটি ক্লিনিক ২৩, ক্লিনিক ৮, পশু চিকিৎসা কেন্দ্র ৪।
লেখা : শাহাবুদ্দিন শুভ
তথ্যসূত্র :
১. সিলেটের ইতিহাস , সংগ্রহ সম্পাদনায় কমল চৌধুরী, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১২, পৃষ্ঠা ১৬
২. শ্রী হট্টের ইতিবৃত্ত পূর্বাংশ – অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি, প্রকাশক – মোস্তফা সেলিম, উৎস প্রকাশন ২০১৭, পৃষ্ঠা ৬৮
৩.মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক ইতিহাস, – সিলেট, লে. কর্ণেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির, বীরপ্রতীক, বাংলা একাডেমী, এপ্রিল ২০১৮ পৃষ্ঠা ১৯১-১৯৭,২৮৭-২৯৪
৪. বাংলাদেশের জেলা ও উপজেলার নামকরণের ইতিহাস, ড. মোহাম্মদ আমীন, শোভা প্রকাশ ২০১৮
৫. উইকিপিডিয়া
৬. তথ্য বাতায়ন
৭. বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা – সিলেট
৮. সিলেট বিভাগের প্রশাসন ও ভূমি ব্যবস্থা ,মোঃ: হাফিজুর রহমান ভূঁইয়া, সেপ্টেম্বর ১৯৯৮, পৃষ্ঠা ৭১,
৯. জনসংখ্যা ২০০১ সালের শুমারী অনুযায়ী
১০. আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বালাগঞ্জ উপজেলার মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭।
১১. বাংলাদেশ ভ্রমণসঙ্গী : মোস্তফা সেলিম, উৎসব প্রকাশন, মার্চ ২০১১, পৃষ্ঠা ২০৪
১২. বালাগঞ্জ উপজেলার মানচিত্রের ছবি বাংলাপিডিয়া থেকে নেওয়া।